1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

বাঁধ ভাঙ্গার পানিতে ডুবছে ফসল, হাওরে হাহাকার

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২২
  • ১৪১ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট :: ঢলের পানির তোড়ে বাঁধ ভেঙে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরে ফসলহানির পর একে একে তলিয়েছে অন্তত ১০টি হাওর। বাঁধে ফাটল ধরায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে আরও দশ হাওরের ফসল। বিপুল ফসলহানিতে হাওরাঞ্চলে কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে হাহাকার।

২ এপ্রিল প্রথম নজরখালী বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় টাঙ্গুয়ার হাওরের ফসল। এরপর একের পর এক বাঁধে ভাঙন ও ফাটল দেখা দেয়। অনেক জায়গায় বাঁধ উপচেও হাওরে ঢুকছে পানি।

কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের হিসাবে, গত ৭ দিনে জেলার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ হাজার টন উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

হাওর নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর হিসাবে, হাওরে পানি ঢুকে তলিয়েছে সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল।

গত এক সপ্তাহে বাঁধ ভেঙে ও উপচে জেলার অন্তত ১০টি হাওরে ফসলহানি ঘটেছে।

শুক্রবার সবশেষ তাহিরপুরের এরাইল্লা কোনা রভীপা মনদিয়াতা বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করে। এর আগে বুধবার রাতে দিরাই উপজেলার চাপতির হাওরের বৈশাখী এলাকার ফসল রক্ষাবাঁধে ভাঙন দেখা দেয়।

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার এক দিনে পাঁচটি হাওরে পানি ঢোকে। ওইদিন ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চন্দ্রসোনার থাল হাওরের ডুবাইল বরুণ কাইচ্ছা বাঁধ, গুরমার হাওরের বাঁধ, সোনামড়ল হাওরের ৫৪ নম্বর প্রকল্পের বাঁধ এবং কয়রানী হাওরে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে।

এখনও বেশ কয়েকটি বাঁধ রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। অনেক বাঁধে দেখা দিয়েছে ফাটল। বাঁধ রক্ষায় স্বেচ্ছাশ্রমে রাতদিন কাজ করছেন স্থানীয়রা।

হাওরে বৃষ্টি কমেছে। তবে উজানে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জের দিরাই-শাল্লাসহ কয়েকটি উপজেলায় নদ-নদীর পানি বাড়ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সুনামগঞ্জ কার্যালয় জানায়, এবার জেলায় ২ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার ২২০ টন।

শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাওরের ৪ হাজার ৯০০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ফসলহানি ঘটেছে দিরাইয়ে। এ উপজেলার ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। ধর্মপাশায় ৯৬৫ হেক্টর, শাল্লায় ২০০ হেক্টর, সদরে ১০০ হেক্টর, দোয়ারাবাজারে ২০ হেক্টর, তাহিরপুরে ৮৫ হেক্টর এবং ছাতক উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, কিছু জায়গায় বাঁধ ভেঙে ও কিছু জায়গায় বাঁধ উপচে হাওরে পানি প্রবেশ করছে।

দুদিন ধরে বৃষ্টি কমেছে। আর বৃষ্টি না হলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে না বলেও আশ্বস্ত করেন এই কর্মকর্তা।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমীর রেজা বলেন, ‘এ পর্যন্ত সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। হাওরে আরও কয়েকটি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো সময় ভাঙন দেখা দিতে পারে।’

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে আরও অন্তত ১০ হাওরের ফসল ঝুঁকিতে থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে জগন্নাথপুরের সর্ববৃহৎ নলুয়া হাওর অন্যতম। সোমবার থেকে এ পর্যন্ত নলুয়া হাওরের কমপক্ষে সাতটি বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় ওই হাওরের ৫ নম্বর প্রকল্পের ভুরাখালি বাঁধে ভাঙন দেখা দিলে কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি মেরামত শুরু করেন। শুক্রবারও বাঁধ রক্ষায় কৃষকদের বাঁশ ও চাটাই নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে দেখা যায়।

এই বাঁধের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি পাউবোর নির্দেশনা অনুযায়ী বাঁধের কাজ করেছি। এ প্রকল্পে ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। এখন পর্যন্ত সাত লাখ টাকা পেয়েছি। নিজের পকেটের টাকা দিয়ে নির্মাণ কাজ শেষ করেছি। বাঁধের কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি।’

স্থানীয় কৃষক রেজাউল হাসানের অভিযোগ, যথাসময়ে এই বাঁধের কাজ শেষ হয়নি। শেষ সময়ে তাড়াহুড়ো করে শেষ করতে গিয়ে নিম্নমানের কাজ হয়েছে। এখন ঢলে বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সুনামগঞ্জে ১২৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে ৫৩২ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৪ কোটি টাকা।

বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও বাঁধ ভাঙার অভিযোগ অস্বীকার করে পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৗশলী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, ‘কোনো ফসলরক্ষা বাঁধ এখন পর্যন্ত ভাঙেনি। কিছু কিছু বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা জরুরিভিত্তিতে তা মেরামত করছি। কিছু হাওরে বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করেছে।’

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..